ঝালকাঠী ব্যুরো ॥ ধর্ষণ মামলার আসামি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাকে গ্রেফতার না করার অভিযোগ উঠেছে ঝালকাঠির নলছিটি থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। রহস্যজনক কারণে আসামিকে গ্রেফতার না করায় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় বাদী মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তবে পুলিশ বলছে আসামিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
সূত্র জানায়, চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে এক বিধবা মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগে নলছিটি উপজেলার ভরতকাঠী গ্রামের নুহু গাজীর পুত্র লুৎফর গাজী (৩৮) ও একই গ্রামের আ. রশিদ হাওলাদারের পুত্র মো. শহীদুল ইসলাম ওরফে কবর শহীদের (৩০) বিরুদ্ধে বাগেরহাটের কচুয়া থানায় গত ২ জুন মামলা দায়ের করেন হোসনে আরা বেগম নামের ওই বিধবা মহিলা।
মামলার এজাহারে জানা গেছে, ঢাকায় চাকুরি দেয়ার কথা বলে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার টাউন নওয়াপাড়া এলাকার মৃত্যু শুক্কুর আলী শেখের বিধবা স্ত্রী হোসনে আরা বেগমকে (৩৫) সঙ্গে নিয়ে গত ২ জুন ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন ওই দুই আসামি। নওয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে ওঠার পর রাত সাড়ে ৭টার দিকে হোসনে আরা বেগমকে কচুয়া থানাধীন খলিশাখালী গ্রামের জনৈক নয়ন শেখের বাড়িতে নিয়ে দরজা আটকে দেয় তারা। এরপর দু’জনে মিলে ওড়না দিয়ে হাত ও মুখ বেঁধে জোরপূর্বক হোসনে আরাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। রাতে হোসনে আরার গোঙ্গানীর শব্দ শুনে এলাকাবাসীরা তাকে উদ্ধার করে কচুয়া থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই ধর্ষক লুৎফর গাজী ও শহীদুল ইসলামকে আসামি করে হোসনে আরা বেগম একটি মামলা (মামলা নং-০৬) দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর গত ৩ জুন কচুয়া থানা থেকে নলছিটি থানায় পলাতক আসামীদের গ্রেফতারপূর্বক নাম-ঠিকানাসহ প্রয়োজনীয় তথ্যাদি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য অনুসন্ধান স্লিপ (আইএস) পাঠানো হয়। কিন্তু নলছিটি থানা পুলিশ শহীদুল নামের ওই আসামিকে গ্রেফতার না করায় সে এলাকায় দিব্যি নানা অপরাধ-অপকর্ম করে যাচ্ছেন। এমনকি মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নলছিটি থানায় অনুসন্ধান স্লিপ আসার পরেও বিভিন্ন কাজে আসামি শহীদুল ইসলাম একাধিকবার থানায় গিয়েছেন। থানার কয়েকজন উপ-পরিদর্শক ও সহকারি উপ-পরিদর্শকের সঙ্গে তার সখ্যতা থাকায় শহীদুল দপদপিয়া ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে অবস্থান করলেও পুলিশ তাকে ধরছে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কচুয়া থানার পরিদর্শক সরদার ইকবাল হোসেন জানান, ধর্ষণ মামলার আসামি শহীদ ও লুৎফরকে গ্রেফতারপূর্বক প্রয়োজনীয় তথ্যাদি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য নলছিটি থানায় অনুসন্ধান (আইএস) পাঠানো হয়েছে। তারা এখনো কোন আসামি গ্রেফতার করতে পারেননি বলে আমাকে জানিয়েছেন। অনুসন্ধান স্লিপের দায়িত্বে থাকা নলছিটি থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক মো. কুহিন আহমেদ শিপনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, মামলার বাদী নলছিটি থানায় যোগাযোগ না করায় মামলাটি সাজানো বলে মনে হয়েছে। এটি মিথ্যা মামলা। কচুয়া থানার পুলিশ চাইলে তাকে গ্রেফতার করে নিতে পারে।
Leave a Reply